মাছ চাষের র্পূনাঙ্গ ব্যবস্থাপত্র এবং মাছ চাষিদের ক্ষতিগ্রস্ত হবার কারণ


মুরগির মাছ চাষে লাভবান হতে হলে মাছ চাষ পরিকল্পনা থেকে শুরু করে বাজারজাত করা পর্যন্ত প্রতিটি পর্বে চাষিকে কিছু নিয়মকানুন মেনে চলতে হয়। মাছচাষির অজ্ঞতা বা অবহেলায় অনেক সময়েই তারা ভুল করে থাকেন এবং পরবর্তীতে ভুলের মাশুল দিতে হয়। চাষিদের এসব ভুল লাভজনক মাছচাষের ক্ষেত্রে অন্তরায়। তাদের এসব ভুল বা অনিয়মগুলো তাদের সুবিধার জন্য আলোচনা করা হচ্ছে। 

সঠিক পরিকল্পনা
মাছ চাষ শুরু করার আগে প্রয়োজন হচ্ছে সঠিক পরিকল্পনা। কী মাছ চাষ করা হবে, চাষের মেয়াদ কতদিন হবে, কখন বাজার জাত করা হবে এবং এজন্য মোট কত খরচ হতে পারে, অর্থ ব্যয়ের সংস্থান আছে বা করা যাবে কি না এসব বিষয়ে পূর্ব পরিকল্পনা থাকতে হবে। তা না হলে চাষ শুরু করার পর নানা প্রতিবন্ধকতায় চাষি বাধ্য হয়েই মাছ চাষের উপর আস্থা হারিয়ে ফেলেন। এর ফলে, প্রত্যাশিত পাদন হয় না এবং বাজেটে ঘাটতি দেখা দেয়। ফলশ্রুতিতে চাষি লাভের পরিবর্তে ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে থাকেন। 

পুকুর খননে সঠিক ধারণা থাকা
যেখানে পুকুর খনন করা হবে সেখানকার অবকাঠামো, পরিবেশ, পানির গভীরতা, বর্ষায় বন্যার হুমকি, পুকুর পাড়ের ঢাল, বকচর, শুষ্ক মৌসুমে পানি কতটা থাকে, পানি হ্রাস পেলে বাইরে থেকে পানি দেয়ার ব্যবস্থা আছে কি না ইত্যাদি বিষয়ে সঠিক ধারণা না থাকলে পুকুর খননেই গলদ থেকে যাবে। আর গলদ থাকলে সারা বছর নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। এজন্য প্রথমেই অভিজ্ঞ স্য কর্মকর্তার পরামর্শ নেয়া প্রয়োজন। 

পুকুর প্রস্তুত যথার্থ না হওয়া
চাষ শুরু করার আগে বা মাছের পোনা ছাড়ার আগে সঠিক নিয়মে পুকুর তৈরি করা অত্যাবশ্যক। শুরুতে বিজ্ঞান পরিবেশসম্মত পুকুর তৈরি করা হলে মাছ চাষের এক তৃতীয়াংশ কাজ সম্পন্ন করা হয়। অথচ অনেক চাষি এক্ষেত্রে অদক্ষতার পরিচয় দেন। ভালভাবে পুকুর শুকানো, রাক্ষুসে মাছ অপসারণ, দূষণ মুক্ত পানি সরবরাহ করা, চুন/জিওলাইট প্রয়োগ, পানিতে প্রাকৃতিক খাবার জন্মানো এবং পুকুরে পানি প্রবেশ এবং নিষ্কাশনের রাস্তা সঠিকভাবে রক্ষা করা অত্যাবশ্যক। এক্ষেত্রে অবহেলা করা হলে পরবর্তীতে নানা প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হয়। 

পোনা নির্বাচনে ত্রুটি
পোনার সঠিক মান এবং জাত নিশ্চিত করা না গেলে চাষি অনেক সমস্যায় পড়তে পারে। চাষিকে মানসম্মত ব্রুড থেকে পাদিত এবং অন্তঃপ্রজনন মুক্ত পোনা, একই আকারের বয়সের রোগমুক্ত পোনা সংগ্রহ করতে হবে। অদক্ষ এবং অনভিজ্ঞ হ্যাচারী টেকনেশিয়ানরা স্য চাষিদের যেভাবে প্রতারিত করছে তা থেকে চাষিদের রক্ষা পেতে হবে। মনে রাখতে হবে যেমন বীজ তেমন ফল। ভাল পোনা না হলে কেবল খাবারের উপরই দোষ চাপালে ঠিক হবে না। 

পোনা পরিবহন অবমুক্তকরণে ত্রুটি
মানসম্পন্ন পোনা সংগ্রহ করার পর তা সঠিক নিয়মে পরিবহণ এবং পরিবহণের পর যথার্থভাবে পুকুরে অবমুক্ত করতে হবে। কেননা অনেক সময় দেখা যায় পরিবহণজনিত ত্রুটি থাকায় এবং পরিবহণের আগে পোনা সঠিক নিয়মে টেকসই করা হয় না বলে পোনা ব্যাপক হারে মারা যায়। অনেক সময় তাক্ষণিক ভাবে মারা না গেলেও পোনা এতই দুর্বল থাকে যে দু'এক দিনের মধ্যে অনেক পোনাই মারা যায়। বিষয়টি মাছ চাষি বুঝতে না পারলে পরবর্তীতে আরো সমস্যা ক্ষতি হয়ে থাকে। কারণে পোনা পরিবহন পোনা ছাড়ার ক্ষেত্রে দক্ষতার পরিচয় দিতে হবে। ব্যাপারে অভিজ্ঞ স্য কর্মকর্তার পরামর্শ নেয়া উচিত। 

পোনা সঠিকভাবে নার্সিং
মাছ চাষি হ্যাচারী থেকে যেসব পোনা সংগ্রহ করেন তার অধিকাংশই সরাসরি চাষ পুকুরে ছাড়ার উপযোগী নয়। চাষ পুকুরে ছোট পোনা সরাসরি ছেড়ে অনেক সময় চাষি ক্ষতিগ্রস্থ হন। এতে ব্যাপক হারে পোনা মারা যেতে পারে। আর বেশি পোনা মারা গেলে চাষি ভুল পথে পরিচালিত হতে পারেন। কারণে পোনা ভালভাবে নার্সিং করতে হবে। নার্সিং করার পর পোনা বড় টেকসই হলে গণনার মাধ্যমে পোনা মজুত পুকুরে দেয়া যায় এবং পরবর্তীতে খাবার ব্যবস্থাপনার সাথে অন্যান্য ব্যবস্থাপনাও যথার্থ হতে হবে। একক চাষের ক্ষেত্রে বিশেষত শিং, মাগুর, কৈ, তেলাপিয়া প্রভৃতি মাছের পোনা হ্যাচারী থেকে সরাসরি চাষ পুকুরে দিয়ে অনেক চাষি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। ক্ষেত্রে তাই নার্সিং বিশেষ জরুরি। 

পোনা মজুতে সংখ্যা ঠিক রাখা
ইচ্ছেমত বা পুকুরের জায়গার তুলনায় অধিক পরিমাণে পোনা ছাড়া আমাদের স্য চাষিদের একটি প্রচলিত ত্রুটি। তাদের ধারণা বেশি পোনা ছাড়া হলেই বেশি পাদন হবে। অনেক সময় তাদেরকে ব্যাপারে পরামর্শ দিলেও তা অনুসারিত হয়নি। চাষের ধরণ, অবকাঠামো, পানি বদলানোর সুবিধা, খাবারের ধরণ, মাছ চাষের মেয়াদ, মাছের প্রজাতি প্রভৃতি বিষয় বিবেচনা করে পোনা মজুতের পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়। ব্যাপারে অভিজ্ঞ চাষি বা অভিজ্ঞ স্য কর্মকর্তার কাছ থেকে তারা পরামর্শ গ্রহণ করতে পারেন। বেশি পোনা নয় বরং পরিমিত পরিমাণে পোনা ছেড়ে অধিক পাদন নিশ্চিত করাই হচ্ছে গুরুত্বপুর্ণ। 

মিশ্রচাষে জাত নির্বাচনে ব্যর্থতা বা অদক্ষতা
মিশ্রচাষে সাধারণত নানা প্রজাতির মাছ চাষ করা হয়ে থাকে। তবে ক্ষেত্রেও নিয়মকানুন রয়েছে। পুকুরে পানির তিনটি স্তরে একই রকমের মাছ থাকে না। কারণে মিশ্রচাষে প্রজাতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে উপরের স্তর, মধ্য স্তর এবং নীচের স্তরের বিষয়টি বিবেচনা করে প্রতিটি স্তর সঠিক ব্যবহারের জন্য প্রজাতি নির্বাচন করতে হবে। অনেক সময় স্য চাষিরা কোনো একটি স্তরে অধিক মাছ ছেড়ে দেন অথচ অন্য একটি স্তরের উপযোগী মাছ ছাড়েন না। এতে চাষে ভাল ফলাফল আসে না। তাছাড়া একই স্তরে বসবাসকারী অধিক মাছের জন্য তাদের নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা করতে হয়। তাই প্রতিটি স্তরের সর্বোচ্চ ব্যবহারের জন্য আনুপাতিক হারে মাছ ছাড়তে হবে। পরস্পরে প্রতিদ্বন্ধিতা হয় এমন প্রজাতি এড়িয়ে যাওয়া ভাল। যেমন, নীচের স্তরে মৃগেল, মিররকার্প, কার্পিও ধরনের মাছ থাকে। পোনা ছাড়ার সময় আনুপাতিক হারেই পোনা ছাড়তে হবে। একই সাথে মৃগেল এবং গলদা চিংড়ি ছাড়া হলে গলদা চিংড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আবার মাংসভোজী অর্থাএকে অপরকে খেয়ে ফেলে ধরনের প্রজাতি মিশ্রচাষে দেয়া যাবে না। মিশ্রচাষে রাক্ষুসে প্রজাতিকে এড়িয়ে যাওয়া অত্যাবশ্যক। 

পানির গুণাগুণ রক্ষা
মাছ পানিতে থাকে বলেই পানির গুণাগুণ পরিবেশ রক্ষা করাটা জরুরি। অথচ অনেক স্য চাষি পানির গুণাগুণ রক্ষায় সচেষ্ট নন। মাছ চাষের জন্য পানির নির্ধারিত স্থিতিমাপ রয়েছে। এগুলো দক্ষতার সাথে রক্ষা করতে পারলে চাষকালীন সময়ে নানা সমস্যা এড়ানো সম্ভব। পানির পিএইচ (PH), অ্যামোনিয়া, ক্ষারত্ব, দ্রবীভূত অক্সিজেন প্রভৃতির আদর্শ মাত্রা রয়েছে। মাত্রা অতিক্রম করলে বা অস্বাভাবিক কমবেশি হলেই বিপত্তি। চাষিরা টেস্ট কিটের (Test kit) এর মাধ্যমে উপরোক্ত মাত্রা পরিমাপ করে পানির গুণাগুণ জানতে পারেন এবং অভিজ্ঞ চাষি করণীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন। কারণে চাষিদের জন্য টেস্ট কিট রাখা অতি জরুরি। 

মানসম্মত খাবার দেয়া
লাভজনক মাছ চাষের জন্য মানসম্মত খাবার প্রদান অন্যতম প্রধান শর্ত। কেননা মাছ চাষে ৭০% এর বেশি খরচ হয় কেবল খাদ্য সরবরাহে। বাজারে নানা কোম্পানীর খাদ্য রয়েছে এবং অনেকে নিজে খাদ্য তৈরি করে সরবরাহ করেন। খাবার যে ভাবেই সরবরাহ করা হোক না কেন তা অবশ্যই মানসম্পন্ন হতে হবে। সঠিক পুষ্টিমান সম্পন্ন এবং মাছের আকার বয়স উপযোগী খাবার সরবরাহ না করলে স্য চাষি ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারেন। অনেক চাষি অজ্ঞতা, সস্তা বা বাকীতে পাবার জন্যে খুবই নিম্নমানের খাবার ক্রয় করে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। ব্যাপারে তাদের সচেতনতা প্রয়োজন। তাছাড়া পরীক্ষাগারে খাদ্য পরীক্ষা করালে খাদ্যের পুষ্টিমান সম্পর্কে জানা যায়। 

খাবার কম-বেশি সরবরাহ করা
কম খাবার সরবরাহ করলে যেমন মাছের প্রত্যাশিত পাদন পাওয়া যায় না, তেমনি বেশি পরিমাণে খাবার সরবরাহে চাষি অধিক ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারেন। এতে খাবার অর্থ দুই- অপচয় হয় এবং পানি দূষণের জন্য মাছ মারা যেতে পারে। অধিকাংশ চাষি ভুলটি করে থাকেন। সাধারণত মাছের পোনার সংখ্যা তাদের অজানা থাকায় খাদ্য প্রয়োগের হিসেবে গরমিল থাকায় মাছচাষি সঠিকমাত্রায় খাবার সরবরাহ করতে পারেন না। এজন্য মাছের সংখ্যা এবং গড় ওজন জেনে পানির গুণাগুণের দিক বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় পরিমাণে খাবার সরবরাহ করা অত্যাবশ্যক। 

নিয়মিত খাবার সরবরাহ করা
অনেক চাষি নিয়মিত খাবার সরবরাহ করার পরিবর্তে মাঝে মাঝে অনিয়মিতভাবে খাবার সরবরাহ করে থাকেন। এভাবে খাবার সরবরাহ করলে বাণিজ্যিকভাবে মাছ চাষ করা সম্ভব নয়। তাছাড়া অনেক চাষি অসময়ে আবার কেউ কেউ ইচ্ছেমত খাবার দিয়ে থাকেন বলে মাছের সুষম বৃদ্ধি হয় না এবং অনেক ক্ষেত্রে খাবারের অপচয় হয়ে থাকে। অর্থাভাবে চাষের মাঝামাঝি সময়ে খাবার সরবরাহে ব্যর্থ হলে চাষি লাভবান হতে পারে না। তাছাড়া মাছ খাদ্য খাচ্ছে কি না তা অনেক চাষি লক্ষ্য করেন না। 

নিয়মিত ওজন নেয়া
১০/১৫ দিন পর পর মাছের গড় ওজন নেয়া আবশ্যক। তা না হলে চাষি খাবারের পরিমাণ নির্ধারণ করতে পারেন না। মাছের ওজন না নিলে চাষিও বুঝতে পারেন না যে মাছের বৃদ্ধি সন্তোষজনক নাকি হতাশাব্যঞ্জক। চাষিকে তাই ১০/১৫ দিন পর পর মাছের গড় ওজন নিতে হবে এবং তদনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। 

স্বাস্থ্য পরিচর্যা
পোনা ছেড়ে এবং খাবার সরবরাহ করেই চাষির দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না। মাছের স্বাস্থ্য পরিচর্যা পর্যবেক্ষণ একটি বড় কাজ। মাছের অস্বাভাবিক আচরণ বা দেহে অস্বাভাবিক কোনো কিছু দেখা গেলে বা ক্ষত হলে স্য বিশেষজ্ঞ বা স্য কর্মকর্তার শরণাপন্ন হতে হবে। তবে মাছের রোগ হলে চিকিসার চেয়ে রোগ প্রতিরোধে অধিক মনোযোগী হলে মাছচাষি ক্ষতি এড়াতে পারেন। স্বাস্থ্যসম্মত চাষ ব্যবস্থা বাস্তবায়নে আজকাল মাছ চাষে নানা ঔষধপত্র এবং পুষ্টি পণ্য পাওয়া যাচ্ছে যা চাষি ব্যবহার করে সুবিধা পেতে পারেন। 

অতিরিক্ত সার প্রদান
মাছ চাষে পানিতে প্রাকৃতিক খাদ্য পাদনে জৈব অজৈব সারের ইতিবাচক ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু প্রায়শ দেখা যায় যে অনেক চাষি কেবল সার প্রয়োগের মাধ্যমে মাছ চাষ করতে চান। তাদের ধারণা কেবল সার প্রয়োগ করলে আর সম্পূরক খাবার দেয়া লাগবে না। ধারণা থেকে অতিরিক্ত সার প্রয়োগে তারা বিপদ ডেকে আনেন। পানিতে প্লাংক্টন বুম বেশি হয়ে সমস্যার সৃষ্টি করে এক পর্যায়ে পানি নষ্ট হয়ে যায় এবং পুকুরে গ্যাস সৃষ্টি হয়ে মাছ মারা যায়। কেবল প্রয়োজন হলেই সার দেয়া উচিত না হলে দরকার নেই। 

পোল্ট্রি লিটার বা বিষ্ঠা ব্যবহার না করা
পোল্ট্রি বিষ্ঠাতে খাদ্যমান রয়েছে চিন্তা থেকে অনেক স্য চাষি পোল্ট্রি লিটারকেই কেবল মাছের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করছে। কিন্তু লিটার ব্যবহারের কারণে চাষিরা নানা সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে। অনেক সময় পোল্ট্রি লিটারে কাঠের গুড়া ব্যবহার করা হয় যা মাছ খেয়ে পরিপাক হয় না এবং তা থেকে বদহজম হয়ে পেট ফুলে মাছ মারা যায়। আবার লিটারে কেবল তুষ থাকার কারণে একই সমস্যা হয়। অধিক পরিমাণে লিটার পানির গুণাগুণ নষ্ট করে। পানিতে অ্যামোনিয়া গ্যাসের কারণে ব্যাপকহারে মাছ মারা যায় এবং পানির গুণাগুণ রক্ষা করতে গিয়ে ঔষধপত্র কিনতে প্রচুর অর্থ ব্যয় হয়। তাছাড়া লিটারের মাধ্যমে মাছে এন্টিবায়োটিকের উপস্থিতি পাওয়া যায় যা স্বাস্থ্যসম্মত নয়। ইউরোপীয় দেশসমূহে মাছে এন্টিবায়োটিক ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে। আমাদের দেশেও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কারণে সস্তায় লাভের মানসিকতা পরিহার করতে পোল্ট্রি লিটার মাছ চাষে ব্যবহারে বিরত থাকা উচিত। 

সঠিক নির্দেশনায় ঔষধপত্র ব্যবহার
আধুনিক মাছ চাষে চিকিসা, প্রতিরোধ এবং নানা সমস্যা মোকাবেলায় বিভিন্ন ধরনের ঔষধপত্র এবং পুষ্টিপণ্য বাজারে পাওয়া যায়। আমাদের দেশেও নানা কোম্পানী নানা পণ্য বাজারজাত করছে। তবে অনেক সময় তারা সস্তায় এসব কিনে প্রতারিত হয়ে থাকেন। আবার সঠিক ব্যবহার বিধি না জানা বা সঠিক মাত্রায় ব্যবহার না করায় সুফল পাচ্ছে না। কারণে সঠিক মাত্রা এবং প্রয়োগ বিধি অবশ্যই মেনে চলতে হবে। 

একাধারে একই পুকুরে মাছ ধরা
একই পুকুর থেকে একাধারে কয়েকদিন মাছ ধরলে চাষি ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারেন। কেননা পরপর কয়েকদিন জাল টানলে অন্য মাছ খাদ্য গ্রহণ বন্ধ করে দেয় বলে মাছের ওজন কমে যায় এবং আঘাতজনিত কারণেও কিছু মাছ মারা যেতে পারে। কারণে একটানা কয়েকদিন মাছ না ধরে মাঝে বিরতি দেয়া উচিত। 

আহরিত মাছ পরিবহনে সমস্যা
মাছ ধরে সঠিকভাবে বাজারজাত করতে না পারলে মাছচাষি চাষের শেষ দিকে এসে ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারেন। যেসব মাছ জীবিত পরিবহন করা হয় সেগুলো অনেক ক্ষেত্রে অধিক সময় পরিবহন বা অন্য কোনো ত্রুটির কারণে মারা যায়। ক্ষেত্রে প্লাষ্টিক ড্রামে পরিষ্কার পানিসহ পরিমিত মাছ পরিবহন করা উচিত। আজকাল ড্রামসহ গাড়ি ভাড়া পাওয়া যায়। শিং, মাগুর, কৈ প্রভৃতি মাছ এভাবে পরিবহন করা হয়। ড্রামে নেয়ার আগে কিছু সময় হাপায় রাখা আবশ্যক। মাছ ধরার /১০ ঘন্টা আগে খাবার দেয়া বন্ধ রাখলে ধৃত মাছ অধিক সময় জীবিত থাকে। অন্যান্য মাছ দূরত্ব ভেদে বরফজাত করা উচিত। 
মাছচাষিরা একটু সতর্ক হলে এবং চাষকালে প্রতিটি ধাপে দক্ষতার পরিচয় দিলে ক্ষতি বা লোকসান থেকে রক্ষা পেয়ে নিশ্চিত লাভবান হতে পারবেন। 

  • Digg
  • Del.icio.us
  • StumbleUpon
  • Reddit
  • RSS

0 comments:

Post a Comment