পুষ্টির অভাবজনিত রোগ


ম্যারাসমাস বা হাড্ডিসার রোগের লক্ষণঃ
সাধারণত এক বৎসরের নীচের বয়সী শিশুদের মধ্যেই এ রোগের প্রকোপ বেশী দেখা যায়। এ রোগ হলে শরীর ক্রমশঃ রোগা হয়ে শীর্ণকায় বা হাড্ডিসার বা কঙ্কালসার হয়ে যায়। ম্যারাসমাসের লণ হলঃ
  •    শিশুর শরীর বৃদ্ধি ব্যাহত হয়, অর্থাৎ বয়স অনুপাতে বৃদ্ধি হয় না।
  •   শরীরের ওজন মারাত্মকভাবে হ্রাস পায়।
  •   শরীরের মাংস পেশী শুকিয়ে কঙ্কালসার হয়ে যায়, মনে হয় যেন শরীরে শুধু হাড় ও চামড়া আছে। ফলে মুখমন্ডল বানরের মত হয়ে যায়। চামড়ার নীচে চর্বি শুকিয়ে যায় ফলে চামড়া ঢিলা বা কুচকে যায়।
  •   পেট বড় হয়ে যায়।
  •   শিশুর মেজাজ খিট খিটে হয়ে যায়।
  •   ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা হতে পারে।
  •   কোন কোন ক্ষেত্রে রক্তস্বল্পতাও দেখা দিতে পারে এবং
  •   শিশুর ক্ষুধা খুব বেশী হয়, কেবল খেতে চায়।
কারণঃ 
হাড্ডিসার রোগের মুল কারণ তাপ ও শক্তিদায়ক এবং শরীর গঠন ও বৃদ্ধিকারী খাদ্য সঠিক মানের ও পরিমাণে না খাওয়ানোর ফলে শক্তি এবং আমিষের মারাত্মক ঘাটতি হয়, ফলে শরীর শুকিয়ে হাড্ডিসার হয়ে  যায়। আনুষঙ্গিক কারণের মধ্যে রয়েছে- অকালে মায়ের দুধ খাওয়ানো বন্ধ করা বা দীর্ঘদিন যাবৎ শুধু মায়ের দুধ খাওয়ানো, অপরিস্কার বোতলে দুধ খাওয়ানোর ফলে শিশু ডায়রিয়া আক্রান্ত হওয়া, আর্থিক কারণে শিশুর বাড়তি খাবার যোগাড় করতে না পারা এবং নানা কুসংস্কাররের ফলে শিশুকে সঠিক খাদ্য ঠিকমত না খাওয়ানো ইত্যাদি।
প্রতিকারঃ
 ম্যারাসমাস রোগে আক্রান্ত  শিশুকে, শরীরের ওজন বাড়ানো এবং দ্রম্নত বৃদ্ধির জন্যে প্রচুর পরিমাণে উচ্চ পুষ্টিমানের শক্তিদায়ক এবং আমিষ জাতীয় খাদ্য উপযোগী করে বারে বারে খাওয়াতে হবে। ডায়রিয়া বা কৃমি বা অন্যান্য সংক্রামক রোগ থাকলে ডাক্তারের পরামর্শমত খাবার স্যালাইন বা অন্যান্য ঔষধও খাওয়াতে হবে। মারাত্মক অবস্থায় হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা করাতে হবে। একবার রোগী ভাল হওয়ার পর পুনরায় যাতে আক্রান্ত হতে না পারে, সে জন্যে পর্যাপ্ত খাদ্যের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

  • Digg
  • Del.icio.us
  • StumbleUpon
  • Reddit
  • RSS

0 comments:

Post a Comment