রাতকানা (নাইট ব্লাইন্ডনেস)


রাতকানা (নাইট ব্লাইন্ডনেস)
    রাতকানা শিশুদের একটি প্রধান রোগ। বাংলাদেশের ব্যপক সংখ্যক শিশু রাতকানায় ভোগে। ৬ মাস থেকে ৬ বৎসর বয়সী শিশুদের মধ্যে রাতকানার প্রকোপ সবচেয়ে বেশি। ৬ বৎসরের নীচের শিশুদের মধ্যে প্রায় ৫ লক্ষ শিশু প্রতি বছর রাতকানায় ভোগে এবং প্রায় ৩০,০০০ শিশু প্রতি বছর পুরোপুরি অন্ধ হয়ে যায়, যাদের প্রায় অর্ধেকই আবার আমিষ শক্তি অপুষ্টিতে আক্রান্ত হয়ে প্রথম বছরই মারা যায়।

রাতকানার লক্ষণঃ

    রাতে বা কম আলোতে চোখে কম দেখাকেই রাতকানা রোগ বলে। রাতকানা হওয়ার পূর্বে এবং পরে কতগুলো লক্ষণ পর্যায়ক্রমে দেখা দেয়, যেমন-

১) চোখের সাদা অংশের রং পরিবর্তন হয়ে বাদামী হয়ে যায়;
২) চোখের পানি কমে গিয়ে সাদা অংশ শুষ্ক হয়ে যায়;
৩) চোখ লাল হয়ে যায়;
৪) অল্প আলোতে চোখে ঝাপসা বা কম দেখে;
৫) উজ্জ্বল আলোর দিকে সরাসরি তাকাতে পারে না;
৬) চোখে ফুলি পড়ে (বিটট স্পট); এবং
৭) চোখের মনিতে ঘা হয়ে পুরোপুরি অন্ধ হয়ে যায়।

কারণঃ
    ভিটামিন ‘এ’ এর অভাবে রাতকানা হয়। শিশুকে মায়ের দুধ না খাওয়ালে, বাড়তি খাবারে ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ খাদ্য কম বা না থাকলে, শিশুর স্বাভাবিক খাবারে ভিটামিন ‘এ’ জাতীয় খাদ্য কম পরিমাণে থাকলে ভিটামিন ‘এ’ এর ঘাটতি হয়ে শিশু রাতকানায় আক্রান্ত হয়।

প্রতিকারঃ
    রাতকানা হলে শিশুকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ খাদ্য যেমন-কলিজা, মাছের তেল, ডিম, মাখন এবং গাঢ় রঙ্গিন শাক সবজি ও ফলমূল খাওয়াতে হবে। শাক সবজি রান্নায় অবশ্যই তেল ব্যবহার করতে হবে। তার সাথে সাথে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়াতে হবে। ক্যাপসুল খাওয়ানোর নিয়ম প্রথম দিন ১টি, দ্বিতীয় দিন ১টি এবং চৌদ্দ দিন পর আরও একটি খাওয়াতে হবে। প্রতিদিন শাক সবজি ও ফলমূল খেলে এবং ৬ মাস পর পর একটি করে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ালে শিশুদের রাতকানা প্রতিরোধ করা যায়। 

সূত্রঃ 
সমন্বিত ফলিত পুষ্টি প্রশিক্ষণ ম্যানুয়াল, বাংলাদেশ ফলিত পুষ্টি গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনষ্টিটিউট (বারটান-BIRTAN), খামারবাড়ী, ঢাকা। পৃষ্টা-৩১-৩২।

  • Digg
  • Del.icio.us
  • StumbleUpon
  • Reddit
  • RSS

0 comments:

Post a Comment